সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

গল্প#যে অনল নেভে না-রানা মাসুদ

গল্প#যে অনল নেভে না-রানা মাসুদ

দুজনের মধ্যে বর্তমানে কোনও প্রেম ভালোবাসার স্বীকৃত সম্পর্ক নাই কিন্তু অদ্ভুত একটা টান আছে। এই টানটার কারণে তারা একটু আনন্দ, একটু ভালোলাগার ক্ষণ খুঁজে নেয়। আমরা বরাবরই এরকম সম্পর্কের মাঝে আলাদা একটা গল্প খুঁজি। আমাদের জীবনের একটা বড় সময় গল্প শুনতে এবং গল্প বানাতেই ব্যয় হয় অথচ ঘুরে দেখি নিজের গল্পটাই অপূর্ণ থেকে গেছে। আমরা আপাতত লোকটা এবং নারীটিকে নিয়ে গল্প খোঁজার চেষ্টা করবো। আমাদের অন্তর্গত সত্তা বরাবরই একটা গল্প বিনির্মাণের জন্য অস্থির হয়ে থাকে।

আমরা গল্প খোঁজার আগে দুজনের সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টা করবো। মানুষকে আর কতটাই জানা যায়! মৃত্যুর আগ মুহূর্তে হঠাৎই উপলব্ধি হয় এই মানুষটাকেই কি আমি এতদিন ধরে দেখে এসেছি। পৃথিবীর অন্যতম শর্ত হচ্ছে গিভ এন্ড টেক। এই দেয়া নেয়ার দুনিয়ায় ভালোবাসাও এক পাক্ষিক নয়। সুখ কী এও যেমন আমাদের চলার পথে ভাবিত করে তেমনি সুখী মানুষ খুঁজতে গেলে বরং সেই পুরনো প্রবাদের সাথে চলাচল – খড়ের গাঁদায় সূচ খোঁজার ন্যায়। একজন অসুখী মানুষ নিজেকে সুখী প্রমাণ করার জন্য নিয়মিত অভিনয় করে যায়। দুঃখী মানুষ দুঃখকে আপন করে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যান অথবা নিজেকে সমর্পণ করেন দুখের নহরে। সুখী নিজ তৃপ্তির গুণেই থেকে যান আপনার মাঝেই। কেননা তিনি সুখী তার তো সুখী সাজার কিংবা সুখ দেখানোর কার্যকারণ নাই।

আমরা এবার সেই পুরুষ এবং নারীটির দিকে আমাদের সমস্ত ইন্দ্রিয়কে সজাগ করি। আমরা পারলে আমাদের চোদ্দটি ইন্দিয়কে বারংবার শাণিত করি এবং চক্ষু,কর্ণ,নাসিকা, জিহ্বা এবং ত্বকের মতো আমাদের পাঁচ কর্মেন্দ্রিয়কে সজাগ করি। আমরা সেইসাথে আমাদের চার জ্ঞানেন্দ্রিয় – মন,বুদ্ধি,চিত্ত এবং অহঙ্কারকেও জাগ্রত রাখি। আমাদের সুশীল বর্ণনার জন্য আমরা নারীটিকে শুভ্রা বলে ডাকতে চাই। কেননা তার অন্তর এবং আচরণে অনেকটাই শুভ্রতার উজ্জ্বলতা ছড়ানো। এবার আমরা পুরুষ মানুষটার একটা নাম রাখতে চাই – ভাসান। বড় অদ্ভুত লাগছে আপনাদের কাছে নিশ্চয়ই ? ইতোমধ্যেই আমরা তার সম্পর্কে যতটা বুঝতে পেরেছি লোকটা একটা ভাসমান জীবনের, যে জীবন যাযাবরের ন্যায় ভেসে বেড়ানোর মতো না হলেও তার জীবনে অনেক কিছুই থিতু না। লোকটা একজন যাযাবর এ কারণে যে তিনি একটা মন খুঁজে ফিরছেন যাতে ছিল তার আদি আবাস।

ভাসান অপেক্ষা করছেন একটা রেস্টুরেন্টের মাঝ বরাবর টেবিলে। উজ্জ্বল আলো সেখানে। রেস্টুরেন্টের কর্ণারে হালকা আলোয় সোফায় বসার ব্যবস্থা। ভাসান জানেন শুভ্রা রেস্টুরেন্টের সোফায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না তাই চেয়ারে বসেছেন। অথচ শুভ্রা এসেই কর্ণার সোফাটাই পছন্দ করলেন। অস্বস্তি সেখানে নয় ; ভাসানের অস্বস্তি শুভ্রার মুখ দেখে। আজ শুভ্রা জগত উজ্জ্বল করে তাকে দেখে হাসি দেননি। শুধু এই হাসির জন্য না। অল্প কিছুদিন ধরে ভাসান খেয়াল করছেন কোথায় যেন একটা বিষাদের সুর বাজছে। যেন রাগ মালকোষ বা মিয়া কি টোরির মতো দুঃখ, দুশ্চিন্তা বাজছে ভেতরে। ভাসান এ কারণে ভেতরে ভেতরে উদ্বিগ্ন। উদ্বিগ্ন হলেও তার আসলে তেমন কিছুই করার নাই। তিনিও ম্যাকাওয়ের মতো পায়ে শক্ত শেকল জড়িয়ে পিঞ্জিরার ওপর বসে মুক্তির আকাশ দেখেন। আর যখন আকাশটাতে উড়তে ইচ্ছে করে তখন শেকলের প্যাঁচ থেকে মুক্তির জন্য বৃথা কসরত করেন। মুক্তির স্বাদ সবাই পায় না, কেউ কেউ মুক্তির অপেক্ষায় নিজেকে হাজার শূলের শয্যায় উপবেশন করান। তারপর দেখেন একের পর এক শূলে আটকে গেছেন তিনি। তখন শুধু বৃথা চেষ্টা মুক্তির।

শুভ্রা আজ চায়ের নিমন্ত্রণ দিয়েছিলেন। কোনও বিশেষ উপলক্ষ না। হয়তো ভাসানকে একটু দেখতে ইচ্ছে করছিল অথবা ভাসানের ছুটিতে একটু আনন্দের নহর বইয়ে দিতে দেখা করতে চেয়েছেন। ঘটনা যাই হোক এই তো কয়েকদিন আগে ভাসান শুভ্রাকে যেরকম স্বতঃস্ফূর্ত পেতেন সেরকম পাচ্ছেন না তা নিশ্চিত। এবার আমরা কোনও একটা বিরহ বিচ্ছেদের গন্ধ পেতে শুরু করেছি। তাই আবার আমরা আমাদের ইন্দ্রিয় প্রখর করি। আমরা একজন নারী ও পুরুষ- যাদের কেউ অন্তত প্রেমিক প্রেমিকার মতো ঘনিষ্ঠ নয় এবং যাদের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান তৈরি হয়েছে। তারা দূরত্ব রেখে বসেন, তারা দূরত্ব রেখে কথা বলেন এবং ক্রমশ কিছুটা নিকট থেকে যেন অতিক্রান্ত কালের ন্যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছেন।

মানুষ দুজন। এটুকুই পরিচয়ে আমরা আপাতত সন্তুষ্ট থাকতে চাই। একজন মানুষের পারিবারিক পরিচয়, অতীত, শিক্ষা কিংবা কর্মের বর্ণনা আর কতটাই গুরুত্বপূর্ণ ? বরং আমরা আলোচিত মানুষ দুজনকে গুরুত্ব দেই। শুভ্রা সালোয়ার কামিজের সাথে পরেছেন কাঁথা স্টিচের একটা শাল। হালকা এবং মার্জিত। চোখে চশমা এবং চশমার পেছনে চোখের কালো মণিতে বুদ্ধির ঝিলিকের সাথে গভীর আত্মবিশ্বাস। খুব ছোট কানের দুল অথচ নাক ফুটো থাকলেও নাকে কিছু নেই। থাকতে যে হবে এমন কোনও কথাও নেই। মুখটা সতেজ দেখালেও কর্মক্লান্তির ছোঁয়া প্রলেপ জড়িয়ে আছে সেখানে। শুভ্রা ধীর অথচ চোখে একটু চঞ্চলতার সাথে সাথে উদাসীনও। একটু অমনোযোগী মনে হয় ভাসানের। ভাসান অদ্ভুত মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকেন। আমরা একটু গভীর দৃষ্টিতে ভাসানকে আবদ্ধ করি। ভাসানের মুগ্ধ চোখে কি কোনও কাম আছে নাকি কোনও লোভ আছে আমরা তা বোঝার চেষ্টা করি এবং সবিস্ময়ে লক্ষ্য করি ভাসানের চোখে এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা। মুখে কিঞ্চিত হাসি লটকানোর চেষ্টা করলেও হতাশা লুকাতে পারছেন না ভাসান। আমরা হতবিহ্বল হয়ে যাই। দুজনের বসার দূরত্ব আমাদের হতবিহ্বল করে তোলে। আমরা চাইছিলাম অনেক নিকট মানে অনেক ঘনিষ্ঠ হবে তাদের বসা। আমাদের আরও হতাশ হতে হয় ভাসান যখন এক কাপ কফি আর শুভ্রা যখন এক গ্লাস ঠান্ডা মজিতো নিয়ে বসেন এবং আরও হতাশ হই যখন দেখি একটা বড় পিসের পেস্টি ওরা দুটি পৃথক চামচ দিয়ে খেতে ধরে। আমরা আশা করছিলাম মজিতো ওরা এক স্ট্র দিয়ে ভাগাভাগি করে খাবে; আমরা আশা করেছিলাম একই চামচ দিয়ে তারা পেস্টি ভাগাভাগি করে খাবে। আমাদের এরকম অনেক আশাই ক্রমশ ব্যর্থ হয় এবং খুব সন্তর্পণে আমরা মানুষ দুজনের ভেতর অর্থাৎ অন্তরটা দেখার চেষ্টা করতে থাকি। এ এক দুঃসাধ্য অভিযান। অন্তর তা তো দেখা যায় না অনুভবে বুঝে নিতে হয়। আমাদের অনুভব বুঝতে পারে কোথাও একটা মস্ত অশান্তি আছে। আছে হতাশার পুনরাবৃত্তি।

শুভ্রা ভাবছেন, ভাসান ভুল করছে। ভীষণ ভুল। আচ্ছা ভাসান কি সত্যিই সত্যিই অসমাপ্ত বিনি সুতোর মালাটা নতুন করে গাঁথতে চাইছে ? নাকি সাময়িক মোহ আর আবেগের বশবর্তী হয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে ; দেখাতে চাইছে ?

ভাসান ভাবছেন, তিনি হয়তো শুভ্রাকে তার ভেতরের অভিব্যক্তি ঠিকঠাক বোঝাতে পারছে না অথবা শুভ্রা বুঝেও না বোঝার ভান করছে অথবা অথবা তাকে বিশ্বাস করছে না। অবশ্য এরকমটা যদি ভাবেনও তা ভাবা শুভ্রার খুব বেশি ভুল না। অযৌক্তিক না। ভাসানের অনেককিছুই আছে যা দ্বৈত টানাপোড়েনের খুব নগ্ন প্রকাশ। ভাসানের একটা নিজস্ব বলয় আছে এবং সেই বলয়ে থেকে একটা নিজস্ব পৃথিবী রচনা করেছেন তিনি। সেই পৃথিবীর এক অন্য মানুষ ভাসান। সেই ভাসান কখনও ছেলেমানুষ, কখনও নির্ভরতার, কখনও অনেকের আবার কখনও খুব দূরের কেউ। শুভ্রা যেমন নিজের অভিব্যক্তির মুক্তো ঝিনুকের খোলসের ন্যায় জড়িয়ে রাখেন। কষ্ট কিংবা বোধের বিভিন্ন প্রকাশ সেই খোলসের ভেতর মুক্তোর মত করেই রাখেন এবং দহন ও দ্রোহে নিজেই ঝিনুকের মত কষ্ট পান। বরং ভাসান এইদিক দিয়ে একদম বিপরীত যদিও তাদের মাঝে অনেক মিল আছে তবে মিলন নেই।

শুভ্রা ভাবছেন, তাকে অনেক দৃঢ় হতে হবে যেমনটা তিনি বরাবরই। তিনি তার অভীষ্ঠ লক্ষ্য পূরণে বরাবরই সংগ্রামী। হ্যাঁ তিনি আজকের এই সফল জীবনের জন্য অনেক অনেক সংগ্রাম করে এসেছেন। এ সংগ্রাম ছিল শুধু প্রাতিষ্ঠানিক না, পারিবারিক ও সামাজিক। শুভ্রা সেসবের তোয়াক্কা করেননি। তার জীবন তার নিজের। একটা জীবন অথচ এই একটা জীবন স্যাক্রিফাইস, পরাজয়, অশান্তি আর অপছন্দের মাঝে কাটিয়ে জীবনাবসান ঘটানোর মানুষ তিনি না। হ্যাঁ তিনি মানুষ। তিনি নারী কিংবা পুরুষ এই ভেদাভেদের মধ্যে নেই। তিনি নিজেকে মানুষ ভাবেন এবং মানুষের মত বাঁচতে চান শেষ পর্যন্ত। আপাতত তার কাছে জীবনের সংগ্রাম এবং ভবিষ্যত বিনির্মাণ মূখ্য। এই মূখ্যতার মাঝে কিছু সামাজিক ও পারিবারিক দায়িত্ব, কর্তব্য এবং তার ভবিষ্যত আপাতত বেশি ভাবনার। তিনি ভাসানের কিছু কিছু বিষয় হয়তো পছন্দ করেন কিন্তু না ভাসানকে তিনি ভাবেন না ; ভবিষ্যত কিংবা বর্তমান এই দুই কালের জন্য ভাবেন না। ভাসান মুক্ত না। অনেক শৃঙ্খল আছে ভাসানের। তিনি ভাসানের নিজস্ব বলয়ের কোনও দীর্ঘশ্বাস কিংবা কোনও দুর্নিবার ঝড়- ঝঞ্ঝা হতে চান না। তেমনি তার নিজের জীবনের মাঝেও কোনও অস্থিরতা চান না। একটা স্বাধীন জীবনের মাঝেও পরাধীনতা বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। স্ব-ইচ্ছায়। কেননা সেখানে অজানিত অনেক সুখ আছে তার।

ভাসান ভাবছেন, কিছুটা গণ্ডিবদ্ধ জীবনে অনেক কষ্ট ও হতাশার মাঝে শুভ্রার সাথে একটু কথা বলা তার অন্যরকম আনন্দের। ভেতরে কোথা থেকে যেন সজীবতা আসে। অথচ সেই কথা আজকাল বড় বেশি যান্ত্রিক অথবা সৌজন্যতার হয়ে গেছে। শুভ্রার কিছু একটা হয়েছে কিছুদিন থেকে। শুভ্রার কথাবার্তার মধ্যে প্রাণ হারিয়ে গেছে তা বুঝতে পারেন ভাসান। কেমন যেন দূর দূর একটা ভাব। কেমন যেন নিঃস্পৃহ কণ্ঠস্বর ! অনেক দূরের কেউ যেন। অবশ্য শুভ্রাকে পুনরায় খুঁজে পাবার পর কাছের কেউ ভাবাটাও ভাসানের জন্য গর্হিত কিছু কেননা তিনি সেই অধিকার তো কবেই হারিয়েছেন। ভাসান শুভ্রার এরকম আচরণে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন কিন্তু কিছু বলতেও পারছেন না। বলার তো তার কিছু নেই কারণ শুভ্রা তো তাকে সেই অধিকার দেয়নি। ভাসান ভীষণ অস্থির বোধ করেন তিনি তার সীমাবদ্ধতার কথাও ভাবেন। তার মনে হয় শুভ্রার হাত চেপে ধরে চিৎকার করে বলেন, পৃথিবীতে এতো জটিল কঠিন সমস্যার সৃষ্টি হয় কেন ?

শুভ্রা ভাবছেন, পথের ব্যবধান আজ এতোটাই বিস্তর যে নতুন করে পথিক হবার চিন্তা করাও দুষ্কর ! ভাসান কিছুটা ছেলেমানুষ। ভাসানের সাথে এখন তার যে ব্যবধান এবং জীবনের নানাবিধ জটিলতা তাতে কোনও কিছু ভাবাও অসম্ভব। অথচ ভাসান কিছু বুঝেও যেন অবুঝ। তার কথা মানুষ ভবিষ্যত জানে না শুধু ভবিষ্যত নির্মাণের চেষ্টা করে। মানুষকে ভবিষ্যত লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগুতে হয়। এরপর ফলাফল হবে কী হবে না তা ভবিষ্যত বলে দেবে। শুভ্রার এসব ভাবনা ভাবতেও ভয় হয় অথবা ইচ্ছে হয় না। কী দরকার আর জটিলতার ! জীবন তো চলছে আলহামদুলিল্লাহ খুব সুন্দর।

ভাসান ভাবছেন, শুভ্রা তার কাছে কোনও মুক্তি চায় না কেননা তিনি তো কোনও বন্ধনে জড়াননি অথচ ভাসান জড়িয়ে গেছেন। ভাসানের কাছে শুভ্রা মানে সেই অতীতের শুভ্রা। শুভ্রার সাথে সম্পর্ক মানে অতীতের সেই স্বর্গ সুখের সম্পর্ক। তিনি একই মানুষের সাথে ভিন্ন ভিন্ন সম্পর্ক ভাবতে পারেন না। ভাসান বুঝতে পারেন অসম্ভব, নিরুপায় এবং দায়িত্বের কিছু দেয়ালের ভেতর বন্দি তিনি।

শুভ্রা ভাবছেন, ভাসান কি বুঝতে পারছে দেয়ালটা ধীরে ধীরে উঁচু হয়ে যাচ্ছে।

এমন সময় ওয়েটার এসে ওদের জিজ্ঞেস করে আর কিছু লাগবে কিনা। ওরা সম্বিৎ ফিরে পান। একটা ঘোরের মাঝে থেকে যেন ওরা ফিরে আসেন। আমরা যে ঘোরের কথা বলার চেষ্টা করছি মূলত তা একজনের মনে হয়। আমরা বোঝার চেষ্টা করছি এর ভেতর আরও কোনও তথ্য আছে না নেই। আমাদের ইন্দ্রিয় আবার সচল হয়।আমরা একজন ওয়েটারকে টেবিলে বিল রাখতে দেখি। বিষাদের ছায়া পড়ে ভাসানের মুখে। শুভ্রার মুখটাও তো মলিন। আমরা বোঝার চেষ্টা করছি এবং আমাদের মন ও মেধা অন্তত এটুকু বুঝতে পারে শুভ্রার ভেতরে ভাসান কোথাও একটু হলেও আছেন।

রেস্টুরেন্টের দরজা পেরিয়ে শুভ্রা এগিয়ে যান। ভাসান কাঁচের দেয়ালের ধারে দাঁড়িয়ে শুভ্রাকে দেখতে থাকেন। পৃথিবীতে অনেক রকম কষ্ট আছে! পৃথিবীতে অনেক রকম রহস্য আছে! পৃথিবীতে অনেক রকম মিরাকল আছে! ভাসান এরকম কোনও একটার জন্য শুভ্রাকে ছাড়িয়ে আকাশের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। মানুষ ভবিষ্যত জানে না কিন্তু ভবিষ্যত মানুষকে নিজের দিকে টানতে থাকে। প্রেমের অনল নেভে না, সুযোগ পেলেই জ্বলে উঠে করে অন্তর পুড়ে ছাই!

শেয়ার করুন ..

Comments are closed.




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge